আল্লামা আহমদ শফী হত্যা ।। বর্তমান আমির বাবুনগরীসহ ৪৩ জন সম্পৃক্ত ।। পিবিআই
আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়েছে। হেফাজত ইসলামের এই প্রয়াত আমিরের হত্যায় হেফাজতের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ন-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ সংগঠনটির মোট শীর্ষ ৪৩ নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা পেয়ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এমন তথ্য জানিয়েই আদালতে তপ্নত প্রতিবেদন সমা দিয়েছে পিবিআই।

সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম বিচারিক আদালত তৃতীয় বিচারক শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে এ প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
প্রসঙ্গত গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আল্লামা আহম শফীকে মানসিক নির্যাতন ও অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
হত্যা মামলাটি ৩৬ জনের বিরুদ্ধে করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির, মাওলা মামুনুল হক, মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ (৫৫), আহসান উল্লাহ (৪৫), আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাকারিয়া নোমান ফয়েজী (৪২), নুরুজ্জামান নোমানী, আব্দুল মতিন (২৫), মো. শহীদুল্লাহ্, মো. রিজুয়ান আরমান, মো. নজরুল ইসলাম (৩৫), হাসানুজ্জামান (২১), মো. এনামুল হাসান ফারুকী (২২), মীর সাজেদ (২০), মাওলানা জাফার আহমেদ, মীর জিয়াউদ্দিন (১৮), চহমদ (১৯), মাহমুদ (২০), আসাদুল্লাহ (৩০), জুবাইর মাহমুদ (২৪), এইচ এম জুনায়েদ, আনোয়ার শাহা (৩৭), মো. আহমদ কামাল (২০), মো. নাছির উদ্দিন (১৯), কামরুল ইসলাম কাছেমী (৩২), মো. হাসান (১৮), ওবায়দুল্লাহ ওবাইদ (৩০), জুবাইর (১৯), মুহাম্মদ (৩৫), আমিনুল হক (৩৩), রফিক সোহেল (৪৩), মবিনুল হক (২১), নাঈম (২০), হাফেজ সায়েম উল্লাহ ও মাওলানা হাসান জামিল।
মামলার এজহারে উলেখ আছে, আল্লামা আহমদ শফী মৃত্যুর আগে শ্বাস নিতে পারচিলেন না। তার অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল কিন্তু দেয়া হয়নি। তখন উল্লেখিত আসামীরা বলছিল, “আগে বুড়াকে পদত্যাগ করতে বল, এরপরে বিদ্যুৎ দিব, অক্সিজেন দেব”। এরপর যখন আল্লামা আহমদ শফীকে অ্যাম্বুলেন্স এ বহণ করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন বাধা প্রধান করে আসামীরা। এরমধ্যে আহমদ শফী কোমায় চলে যান।
বাদী এজহারে উল্লেখ করেন, আহমদ শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসতে অনেক দেরিত হয়ে গিয়েছিল। এই কারণে তিনি কোমায় চলে যান। এ কারণে ‘রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এখন আর সম্ভব নয়’ বলে ঘোষণা করেছিলেন চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ডাক্তারদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য আল্লামা আহমদ শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহমদ শফীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার শুরু হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে। তখন থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রমূলক ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়।
এরপর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
পরে গত ১২ জানুয়ারি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) একটি এর টিম হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে হেফাজতের বর্তমান আমির বাবুনগরীসহ অভিযুক্তদের সাথে কথা বলেন। এর তিন মাস পর আদালতে পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।