হেফাজতের তান্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্র । তরুণ যুবকের প্রাণহানি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় সফরকে কেন্দ্র করে, মাদ্রাসা ছাত্রদের তাণ্ডবে ও ধ্বংসলীলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর।
![হেফাজতের তান্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্র । তরুণ যুবকের প্রাণহানি হেফাজতের তান্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্র । তরুণ যুবকের প্রাণহানি](https://bayofbengalnews.com/wp-content/uploads/2021/03/image-405891-1616774752-image-1616780883-1024x538.jpg)
শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর ২ টায় ব্রাম্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডের মাদ্রাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মাদ্রাসা ছাত্ররা সিগন্যাল বক্স ভেঙে ফেলে, এতে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রদের তাণ্ডবের সময় ব্রাম্মণবাড়িয়া শহরের দাতিয়ারা নামক এলাকার সাগর মিয়ার ছেলে মো. আশিক (২০) নামের এক তরুণ যুবক নিহত হয়েছেন। কিন্ত এই তরুণ মৃত্যু কিভাবে হয়েছে তা এখনো কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
এসময় ব্রাম্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল পুরো বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধরা শহরের প্রধান সড়কের বিভিন্ন জায়গায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করে। পরে রেলস্টেশনে বিক্ষোভ করে আগুন লাগিয়ে দেয়। রেল স্টেশনের কন্ট্রোল রুম, টিকিট কাউন্টার, সিগন্যাল, মাস্টার রুম, প্যানেল বোর্ডসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ঢাকাগামী একটি ট্রেন কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করার সময় বিক্ষুব্ধরা পাথর নিক্ষেপ করতে থাকলে ট্রেনটি ফিরে যায়। এদিকে বিক্ষুদ্ধরা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে বিকেল ৫টায় ব্যাপক হামলা চালাইয় বলে জানা যায়।
শহরের কাউতলী, ভাদুঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। ওখানে শহরের সড়কে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় অবরোধ ও বিক্ষভ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুটতে বাধ্য হয়। এতে আটজন আহত হওয়ার খবর জানা যায়।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর, নন্দনপুর, মজলিশপুর, ঘাটুরাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে বিক্ষুদ্ধদের অবরোধ ও ব্যাপক হামলা-ভাংচুরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গার দূরপাল্লা সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুদ্ধরা শহরের জেলা পরিষদ, পৌর মুক্ত মঞ্চ, পৌর মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলে বলে জা যায়।
বিক্ষুব্ধরা স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা ও সড়ক সজ্জিতকরণ ব্যানার ফেস্টুন ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা হয়। বিক্ষুব্ধরা নরেন্দ্র মোদিবিরোধী শ্লোগান দেয় ও সড়ক দখল করে স্লোগান দিতে থাকে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার শোয়েব আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের স্টেশনে কয়েকশ মাদ্রাসা ছাত্র ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। পরিস্থিতি কঠিন ও স্পর্ষকাতর হওয়ায় আপাতত সারাদেশের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইও-১) ইমতিয়াজ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আশিক নামের এক তরুণ মারা গেছেন বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু কীভাবে আশিক মারা গেছেন, তা তিনি জানেন না। ওই তরুণের লাশ কোথায় রয়েছে, তার কোনো তথ্যও পুলিশের কাছে নেই বলে জানান।