রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১০
রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আরিফ মাহমুদ জয়, রেদোয়ান সাব্বির, মাসুদ, জোবায়ের হোসেন, তানভীর হাসান, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ ও সাইফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার তেজগাঁও পুলিশের ডিসি হারুন-অর রশীদ এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
ডিসি হারুন আর রশিদ আরও বলেন, মাইন্ড এইড হাসপাতালের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। অবৈধভাবে তারা মানসিক রোগীর চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছে।
নিহত আনিসুল করিম বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনারের পদে কর্মরত ছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান।
এদিকে এ সংক্রান্ত একটি সিসি ফুটেজে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন লোক আনিসুল কে টেনে হিঁচড়ে একটি রুমে ঢোকাচ্ছেন। এরপর তাকে শরীরের উপর উঠে হাঁত পা চেপে ধরতে এবং কয়েকজনকে কিল ঘুষি মারতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি অজ্ঞান হয়ে আক্রমণকারীরা তার মুখে পানি দেয় এবং পানি দিয়ে মেঝেতে কিছু একটা পরিষ্কার করে। এপ্রোন পরিহিত দুজন নারীকে আনিসুলের বুকে পাঞ্চ করতেও দেখা যায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে হাসপাতালের লোকজন তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি অসুস্থ হয়ে যান।
তবে পরিবারের দাবি, তাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। আনিসুল করিমের রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার ভাইয়ের উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগজনিত সমস্যা থাকলেও তা তেমন গুরুতর ছিল না। হাসপাতালের লোকদের শারীরিক আঘাতের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘মাইন্ড এইড হাসপাতালে এএসপি আনিসুল করিম নিহতের ঘটনাটি একটি হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এই হাসপাতালের স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনও অনুমোদন নেই, চিকিৎসকও নেই। কয়েকজন রোগী রয়েছে, তারা চলে যাওয়ার পর আমরা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেবো। আমরা ইতোমধ্যে হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
এসি/বে অব বেঙ্গল নিউজ/স্টাফ রিপোর্টার।